বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০২:৫৬ অপরাহ্ন

১৯ বছরে তিন বার পড়ে রায় ঘোষণার তারিখ

১৯ বছরে তিন বার পড়ে রায় ঘোষণার তারিখ

স্বদেশ ডেস্ক:

চট্টগ্রামের হাটহাজারীর ফতেয়াবাদ ছড়ারকুল এলাকায় একটি সেলুনে শিবিরকর্মীর গুলিতে ২০০১ সালের ২৯ ডিসেম্বর নিহত হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহসভাপতি আলী মর্তুজা চৌধুরী। ২০০৩ সালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা এসেছিলেন হাটহাজারীতে। আলী মর্তুজা হত্যার বিচার দাবি করেছিলেন। সেই বিচার গত ১৯ বছরেও হয়নি। তিনবার রায় ঘোষণার তারিখ দিয়েও ঘোষণা হয়নি রায়।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সালের ২৯ ডিসেম্বর আলী মর্তুজা চৌধুরী হত্যা হওয়ার পরদিন হাটহাজারী থানায় মামলা করেন তার বড় ভাই ও ফতেয়াবাদ আদর্শ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী নাসের চৌধুরী। এতে আসামি করা হয় আটজনকে। চতুর্থ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এই মামলার বিচার চলে। ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়েছেন আদালত।

তদন্ত শেষে পুলিশ ২০০৪ সালে এই মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এতে আটজনকেই অভিযুক্ত করা হয়। আসামিদের মধ্যে ঘটনার পর থেকে পলাতক শিবির ক্যাডার হাবিব খান। জামিনে গিয়ে পলাতক মো. হাসান ও মো. ইসমাইল। অন্যদিকে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন সন্ত্রাসী গিট্টু নাসির। গণপিটুনিতে নিহত হন আইয়ুব আলী ওরফে রাশেদ এবং সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন সাইফুল ইসলাম। শিবির ক্যাডার তছলিম উদ্দিন ওরফে মন্টু ও মো. আলমগীর ওরফে বাইট্টা আলমগীর কারাগারে। এর আগে আলোচিত এই হত্যা মামলার বিচারকাজ শেষ হয় গত বছর মে মাসে। আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম তিনবার আলী মর্তুজা হত্যা মামলার রায়ের দিন ধার্য করেছিলেন। এরপরও রায় ঘোষণা না হওয়ায় মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে দেওয়া হয়। বর্তমানে সেখানে বিচারাধীন রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে ভাই হত্যার বিচার চেয়ে গতকাল মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন আলী মর্তুজার ভাই চবির যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আলী আজগর চৌধুরী। তিনি লিখেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা থাকাকালে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক

শহীদ মোহাম্মদ আলী মর্তুজা চৌধুরীর হত্যার বিচারের দাবি করেছিলেন। ২০০৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর শহীদ মর্তুজার বাড়িতে গিয়ে এবং তার কবরে ফুল দিয়ে আপনি আপনার কর্মীর প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ করেছিলেন। আপনি হয়তো জানেনই না আজও মর্তুজার খুনের বিচার হয়নি। আপনি বিচার ব্যবস্থার ব্যাপক সংস্কার করলেও অব্যবস্থাপনা এবং হয়রানি বন্ধ হয়নি।

অধ্যাপক আলী আজগর আরও লিখেন, মর্তুজা হত্যার বিচারের রায় ঘোষণার পরপর তিনবার তারিখ দিয়ে মামলা এখন আবার অন্য আদালতে। বিচারের নামে প্রহসনের এ যাতনা কেবল ভুক্তভোগীরাই অনুভব করতে পারে। আপনি যাদের দায়িত্ব দিয়েছেন তাদের এসব দেখার সময় নেই। বিশ্বাস রাখি, আপনার দৃষ্টিগোচর হলে দায়িত্বশীলদের জবাবদিহি করতেই হবে।

মামলার বাদী ফতেয়াবাদ আদর্শ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী নাসের চৌধুরী বলেন, মামলার সব কার্যক্রম শেষে চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালতে তিন তিনবার রায় ঘোষণার তারিখ দেওয়া হয়। কিন্তু একবারও রায় ঘোষণা হয়নি। বর্তমানে মামলাটি দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছে। তিনি বলেন, এত বছর পরও বিচার কার্যক্রম শেষ না হওয়ার কারণ তৎকালীন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের আন্তরিকতার অভাব। তাই বারবার মামলার রায় ঘোষণার তারিখ দিয়েও রায় ঘোষণা হয়নি।

মামলার সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাইলে দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি আইয়ুব খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877